বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নিজের বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্য ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ২৪ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেবেন। এদিন গেরুয়া পাঞ্জাবি ও সাদা শাল গায়ে দিয়েই এদিন অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হে বিধাতা দাও দাও মোদের গৌরব দাও’- এই বাণী দিয়েই ভাষণ শুরু করেন মোদী। বিশ্বকবির বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের দিনে কবির লাইন উদ্ধৃত করেই পড়ুয়াদের জন্য গৌরব প্রার্থনা করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, রেজিস্ট্রার, শিক্ষকগণ, পড়ুয়া ও প্রাক্তনীদের শুভেচ্ছা জানালেন তিনি।
- তিনি বলেন, ‘আমার জন্যও এটা গর্বের আমাকে এই পুণ্যভূমি নিয়ে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
- মোদী আরও বলেন, গুরুদেবের চিন্তা, দর্শন ও পরিশ্রমের ফল বিশ্বভারতী। কবি ভারতের জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার বাস্তব রূপ বিশ্বভারতী। নতুন ভারতের নির্মাতে সমস্ত রকম প্রয়াস করে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতন ভারত নির্মাণে হাতে হাত লাগিয়ে কাজ করছে। প্রকৃতির সঙ্গে অধ্যায়ন ও জীবনের উদাহরণ এই বিশ্ববিদ্যালয়।
- তিনি বলেন, ‘ভক্তিআন্দোলনে একজোট হয়েছি, জ্ঞান আন্দোলন আমাদের এগিয়ে রেখেছ, আর কর্ম আন্দোলন আমাদের দাবি ছিনিয়ে নিতে শিখিয়েছে।’
- মোদীর কথায়, ‘কবি আমাদের গ্রাম, কৃষি, বানিজ্য ও ব্যাপার, আর্ট ও সাহিত্যতে আত্ননির্ভর দেখতে চেয়েছিলেন। আত্মশক্তি থেকে রাষ্ট্রনির্মানের যে কথা উনি বলেছিলেন তা এখনও গুরুত্বপূর্ণ।’
- মোদী বলেন, ‘ভারতের আত্মা, আত্মনির্ভরতা ও আত্মসম্মান- একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে। ভারতের আত্মসম্মান রক্ষার জন্য বাংলা নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন। ক্ষুদিরাম, বীনা দাস, প্রফুল্ল চাকী, প্রীতিলতা ওয়েদ্দেদার। এরকম অসংখ্য মানুষ আছে যাদের নাম ইতিহাসেও লেখা নেই। তারা দেশের জন্য হাসতে হাসতে মৃত্যুকে বরণ করেছে।’
- ভারতকে আত্মনির্ভর বানাতে বাংলার সংযোগের কথা বলতে ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পর ভারত স্বাধীন হয়েছিল। নতুনভাবে জেগে উঠব আমরা। আমাদের শক্তি জোগাবে গুরুদেবের কথা ও দর্শন।’
- আক্ষেপের সুরে মোদী বলেন, ‘এবারে পৌষমেলার আয়োজন করা যায়নি। ১০০ বছরের দীর্ঘযাত্রায় এই ঘটনা তিনবার ঘটেছে।’
- সঙ্গীত ও কলা ছাড়া রাষ্ট্র নিজের স্বাভাবিকত্ব হারিয়ে ফেলে। বাংলার সস্কৃতি দেশের মেরুদন্ড ছিল। ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তাহলে একলা চলো রে’। এই মন্ত্রেই উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা বলেন মোদী।
- ‘ওরে নতুন যুগের ভোরে, দিসনে সময় হারিয়ে বৃথা সময় বিচার করে’, এই উপদেশ মনে রাখার কথা বলেন মোদী।
- এদিন তিনি বলেন, ‘ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল লাগল যে দোল। স্থলে জলে বনতলে লাগল যে দোল। দ্বার খোল দ্বার খোল। দেশের নতুন সম্ভবনার দ্বার আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’